রংপুর প্রতিনিধি
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আধিপত্যবাদী বিদেশি ভারতীয় শক্তি এ দেশে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শক্তিকে টিকিয়ে রাখার জন্য বারবার মদদ দিয়েছে। আন্দোলন যখনই সফলতার পর্যায়ে চলে গিয়েছে, তখনই সে দেশের পররাষ্ট্র, মিলিটারি, গোয়েন্দাদের নানান প্রতিনিধি ভূমিকা রেখে মানুষের ন্যায্য অধিকার আন্দোলনকে তারা বারবার ব্যর্থ করেছে।’
রোববার দুপুরে রংপুর নগরীর একটি হোটেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে নিহত শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ ও সহানুভূতি বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এই গণঅভ্যুত্থানে এত আহত, এত নিহত দেখে আমরা নিজেদেরকে সামলাতে পারিনি। আমরা অনেক সময় হতাশ হয়ে যেতাম যে, এই স্বৈরাচার শেখ হাসিনার কোনোদিন পতন হবে না। লোকেরা জিজ্ঞেস করত যে, এই হাসিনা কি বিদায় নেবে না? প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল মিলে আমরা ১৫ বছর আন্দোলন করেছি। আমরা নির্বাচন করেছি কিন্তু আমাদেরকে ভোটে জিততে দেয়নি, ভোটগুলো কেটে কেটে ভরে দিয়েছে। পুলিশ অত্যাচার করেছে, হাজার হাজার লোককে মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়েছে। ফাঁসি দিয়েছে, আন্দোলন দমন করেছে পুলিশি নির্যাতনের মাধ্যমে। বারবার আমরা ব্যর্থ হয়েছি। আমরা মনে করেছি এই ফ্যাসিবাদকে আর নামানো যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী, সাহসী জনগণ ও বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ তরুণ দামাল ছাত্রসমাজ বুক পেতে দিয়ে ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের এদেশীয় সেবাদাস শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদকে বিদায় করেছে। বাংলাদেশের মানুষ স্বভাবগতভাবে কোন আধিপত্যবাদকে বরদাস্ত করে না। আমরা তো কোনো বিদেশিদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করি না তাহলে আপনারা কেন হস্তক্ষেপ করেন। এই ৫ আগস্ট প্রমাণ করে বিদেশি হস্তক্ষেপে এ জাতির উপর চাপিয়ে দেয়া ফ্যাসিবাদকে সকল বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এদেশের তরুণ ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে প্রতিরোধ করতে প্রস্তত।
জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, এখন বড় চ্যালেঞ্জ হল দেশের সংস্কার। গত ১৫ বছরে রাষ্ট্রযন্ত্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ফ্যাসিবাদের দোসররা ঘাপটি মেরে বসে আছে। সংবিধানের সংস্কার,ইলেকশন কমিশনের সংস্কার এবং আমাদের যেগুলো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান আছে সবগুলো দলীয়করণ হয়েছিল।সেগুলোর সংস্কার করতে হবে। ১৫ বছরের এসব জঞ্জাল সাফ করতে দীর্ঘ সময় লাগবে। অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের জন্য সব সংস্কার সম্ভব না হলেও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে যেগুলো করা দরকার এখন সেটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই সংস্কারগুলো করে একটি নির্বাচনের আয়োজন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারদেরকে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি আজীবন তাদের পাশে থাকার ঘোষণা দেন জমায়েত সেক্রেটারি।
মহানগর জামায়াতের আমীর এটিএম আজম খানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন,সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাহবুবুর রহমান বেলাল, জামায়াতের জেলা আমীর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, সেক্রেটারি ওবায়দুল্লাহ সালাফি, মহানগর শিবিরের সেক্রেটারি নুরুল হুদাসহ নেতৃবৃন্দ।
Leave a Reply