ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ভোটারকেই ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীর কর্মীসহ বিএনপি নেতাদেরও। তবে রির্টানিং অফিসার বলছেন,সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা যায়, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে আগামীকাল ২৯ মে পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উপজেলার ১০ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ৭৬টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের জন্য ইতিমধ্যে ৭৬ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৫৮৫ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ১১৭০ জন পোলিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসব ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়ম করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সূত্র জানায়, লোহাগাড়া ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক জগথা বিলডাঙ্গী গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে রুবেল রানাকে পীরগঞ্জ বণিক সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অথচ তিনি ওই কেন্দ্রের ভোটার। তিনিসহ তার পরিবার এবং আশপাশের লোকজন ওই কেন্দ্রেই ভোট প্রদান করে থাকেন। রুবেল রানা ছাড়াও একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর কয়েকজন কর্মীকেও প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত¦ পেয়েছেন বিএনপি নেতা জিল্লুর রহমান ও মনসুর কামালসহ একাধিক নেতা। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবেও চেয়ারম্যান প্রার্থীর বেশকিছু কর্মীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ভোটার বা প্রার্থীর কর্মীকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথা নয়। কিন্তু তারপরেও তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সহকারী রির্টানিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তর এসব ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার নামের তালিকা প্রস্তুত করেছেন। অভিযোগ আছে, তালিকা প্রস্তুতের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কর্মরত মনিরুজ্জামান মনির কর্তৃপক্ষের চোখে ধুলো দিয়ে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কর্মকর্তাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। বিশেষ সুবিধা নিয়ে তালিকা থেকে নাম বাদ পড়াদেরও ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। সেইসাথে নিজ কেন্দ্র বা এর আশেপাশের কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করার সুযোগ করে দিয়েছেন বলেও ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগে উষ্মা প্রকাশ করে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী সহকারী রির্টানিং অফিসারের কাছে মৌখিক অভিযোগ করলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি।
অভিযোগ বিষয়ে সহকারী রির্টানিং অফিসারের দপ্তরে কর্মরত মনিরুজ্জামান মনির বলেন, অভিযোগ সত্য নয়।তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে তাঁর কোনো হাত নেই।
এবিষয়ে সহকারী রির্টানিং অফিসার রমিজ আলম বলেন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়মের বিষয়ে আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তাছাড়া আমার দপ্তরে কারও বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিব।
জেলা রির্টানিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রামকৃষ্ণ বর্মন বলেন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে তেমন কোনো বাধাধরা নিয়ম নেই। আমরা সঠিকভাবে তালিকা করার চেষ্টা করেছি। তারপরও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply